নাজমুল হাসান অনিক, সিরাজগঞ্জঃ
আজ ১৪ই ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালেই এই দিনেই সিরাজগঞ্জ জেলার বীর সন্তানেরা সিরাজগঞ্জ জেলাকে হানাদার মুক্ত করে। সারাদেশের ন্যায় বাংলাদেশের বুকে সিরাজগঞ্জ হয় হানাদার মুক্ত এবং স্বাধীন একটি জেলা।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সিরাজগঞ্জের বীর এবং সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা এক অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেন। জেলার বীর সন্তানেরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে সকলে একত্রিত হয়ে পলাশডাঙ্গা যুবশিবির নামে একটি সংগঠন করে। এই সংগঠনের মাধ্যমে তারা স্থানীয়ভাবেই পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলে এক বিশাল আক্রমনাক্তক বাহিনী। গঠিত হয় মুক্তি সংগ্রামী নামক এক গেরিলা বাহিনী।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সিরাজগঞ্জে অনেকবার যুদ্ধ হয় পাক হানাদারদের সাথে। তার মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শৈলাবাড়ীতে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ স্মরণীয়। শক্তিশালী পাক বাহিনীর সাথে মাত্র তিন’শ জন মুক্তিযোদ্ধা ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যায়। এ সময় ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হলেও অনেক পাক হানাদার বাহিনী পরাস্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার কাছে তারা হার মোনে নেয়।। ১৪ ডিসেম্বর ভোরে শহর ছেড়ে পাকবাহিনী পালিয়ে গেলে সিরাজগঞ্জ শত্রু মুক্ত হয়।
মুক্ত হওয়ার সাথে সাথেই সিরাজগঞ্জ জেলার মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় উল্লাস করতে করতে সিরাজগঞ্জ সরকারী ডিগ্রী কলেজ মাঠে এসে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন সেই সময়ের ছাত্র নেতা,সিরাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি আব্দুর রউফ পাতা। পাকিস্থানীরা পালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি, কামারখন্দ, রায়গঞ্জ, চৌহালি, উল্লাপাড়া,শাহজাদপুর সহ অন্যান্য থানা ও এলাকা হানাদার মুক্ত হয়। সিরাজগঞ্জ জেলা হয় একটি হানাদার মুক্ত জেলা।
0 মন্তব্য