বৃক্ষপ্রেম
দিপংকর দাশ, হবিগঞ্জ
রাকেশ সাহা। সপ্তম শ্রেণিতে
পড়ুয়া এক মেধাবী ছাত্র। সিংড়া দমদমাদম স্কুল এন্ড কলেজে পড়ে। সারাক্ষণ বিভিন্ন
গাছ-গাছালির পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মা বলেন, 'কিরে রাকেশ শুধু গাছ নিয়ে পড়ে
থাকলে হবে? পড়ালেখার পাশাপাশি বাবাকেও তো তার দোকানের কাজে সাহায্য করতে পারিস?
উত্তরে রাকেশ বলে, 'হ্যাঁ মা, এই শেষ করে আসছি।' কিন্তু গাছ নিয়ে তার গবেষণা
অবিরাম চলতেই থাকে। গাছের প্রতি তার অগাধ প্রেম। একদিন স্কুল থেকে আসার পথে সে
দেখে একটি নারকেল গাছ পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। সে তার বোতল থেকে পানি ঢেলে
দেয়। পানির স্পর্শ পেয়ে গাছটির প্রাণ যেন রক্ষা পেল। সে গাছটির পাতায় হাত বুলিয়ে
দিয়ে বলে, 'হায়রে মানুষ, যে গাছ তোমাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য অক্সিজেন দেয়, খাবার
দেয়, কাঠ দেয় সে গাছকে এত অবহেলা করো তোমরা? বুঝবে একদিন ঠিকই বুঝবে যেদিন শ্বাস
আটকে যাবে, নিঃশ্বাসে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেবে সেদিন ঠিকই বুঝবে। নারকেল গাছে
হাত বুলিয়ে সে বাড়ির পথে হাঁটতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে সে একটি বটগাছের ছায়ায় বসে
খানিকটা জিরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে।
সে দেখে কিছু লোক বটগাছের গায়ে লোহা দিয়ে কিছু ফেস্টুন গেথে দিচ্ছে।
ফেস্টুনে লেখা, 'বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ চলছে। আসুন বৃক্ষ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই।
লেখাটা পড়ে রাকেশ ফেস্টুন লাগানো দুজন ছেলেকে জিজ্ঞেস করে, 'আপনারা কি সত্যিই
বৃক্ষ লাগিয়ে পরিবেশ বাঁচান? নাকি বৃক্ষকে নষ্ট করে পরিবেশ ধ্বংস করেন? রাকেশের
প্রশ্ন শুনে দুজনই অবাক হয়। বলে, 'কেন বাবু? আমরা তো বৃক্ষ লাগানোর জন্যই
মানুষকে উৎসাহ প্রদান করি।' রাকেশ বলে, 'আমার তো মনে হয় না। মুখে বলেন এক আর
করেন আরেক। আপনারা বৃক্ষ রোপণের কথা বলছেন ঠিকই, কিন্তু এটা ভুলে যাচ্ছেন যে
আপনি আপনার ফেস্টুন লাগাতে গিয়ে আরেকটি বৃক্ষকে নষ্ট করে ফেলছেন। আপনার গায়ে
লোহা ঠুকে দেখি আপনার কেমন লাগে?' দুজনই লোকই তাদের ভুল বুঝতে পারে আর তাদের
ফেস্টুন নামিয়ে নেয়। আর বলে, 'ধন্যবাদ
বাবু।
|
0 মন্তব্যসমূহ