পৃথিবী ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন
আমাদের দেশের কিছু মানুষ ধর্ষণ করতেও পিছু পা হচ্ছে না। এই নাকি আমাদের সমাজের সর্বোচ্চ পর্যায়ে
নারীদের অবস্থান ! এই অবস্থান আমাদের নারীদের ! ধিক্কার জানাই সেসব ধর্ষকদের যারা মেয়েদের
সম্মান দিতে জানে না । এদের বিচার কই
! আমাদের সমাজের বেশির ভাগ পুরুষেরা আজও পারেনি তাদের বিকৃত মানসিকতা বদলাতে। তাহলে তাদের থেকে কি শিখবে আমাদের এই
সমাজের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ! একটা সমাজের উন্নতি তখনই সম্ভব যখন সেই সমাজের নারী-পুরুষেরা
সমানভাবে এগিয়ে যেতে পারবে। গবেষণায় দেখা
গেছে আমাদের দেশে গড়ে প্রতিদিন ৩জনেরও অধিক নারী ধর্ষিত হচ্ছে, সাথে শিশু ধর্ষণ তো
রয়েছেই। বর্তমান সময়ে
এসেও আমরা নিরাপদ হতে পারছি না।
যখন একটা নারীকে সন্ধ্যার পর একা বাড়ির বাইরে বের হতে হয় তখন তাকে তার নিরাপত্তা নিয়ে
কতটা অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হয় তা একমাত্র সেই বোঝে। তাছাড়াও তো রয়েছেই আমাদের সমাজের কিছু
মানুষদের বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি।
এই সমাজে মেয়েদের পোশাক এবং চরিত্র নিয়ে হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, কিন্তু
কেন !! এই আমরা স্বাধীন! আমাদের মেয়েদের পোশাক এবং চরিত্র নিয়ে নয়, বরং আমার
মনে হয় সেইসব প্রশ্নকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি আর বিকৃত চিন্তাভাবনা নিয়েই প্রশ্ন করা উচিত। যখন খবরে ধর্ষণ নিয়ে হাজারো প্রতিবাদ
দেখি বা দেখি কিছু প্রভাবশালীদের বা জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা ব্যবহার করে কিছু ধর্ষকেরা
তাদের দোষ ঢাকতে সক্ষম হচ্ছে ,তখন হয়ত বাধ্য হয়েই অবাক হতে হয়, এই নাকি আমরা স্বাধীন
! যেখানে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের কাজ ক্ষমতার জোর দেখানো নয় । বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও এটাই বাস্তব
। আর এসকল মানুষদের
ক্ষমতার সাহায্য নিয়ে কিছু ধর্ষকেরা আজও তাদের প্রাপ্য শাস্তি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে
নিতে পারছে । এর ফলে তাদের
চিন্তাভাবনায় মিশে গেছে যে আমাদের দেশে ধর্ষণ বা যেকোনো অপরাধের সহজে সুষ্ঠ কোনো বিচার
হয় না। আর সুষ্ঠ বিচার
না হলে তাদের অপরাধ কখনোই দমিয়ে রাখা সম্ভব না বলে আমি মনে করি। এসকল কারণের জন্যেই আমাদের সমাজে
ধর্ষণের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
শুধু রাস্তাঘাটে নয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতেও মেয়েরা নিরাপদ নয়। ভবিষ্যৎ এ আমাদের সাথে এ সব অপরাধ হলে
এ সমাজ নিবে কি তার দায়? এর নিশ্চয়তা কোথায় ? যেখানে বর্তমান পরিস্থিতির দায়ই নিতে
পারছে না এ সমাজ। এটা সত্যিই অনেক
দুঃখজনক। আমাদের সমাজের
আজও কিছু মানুষেরা ছেলেদের উত্যক্ত করার জন্য মেয়েদেরকেই দোষারোপ করে। যার ফলে তারা মেয়েদেরকে বোঝা মনে করতে
থাকে। যা বাল্যবিবাহের
এক অন্যতম কারণ। যার ফলে অনেক
মেয়েরা তাদের স্বাধীনতা হারাচ্ছে, হারাচ্ছে তাদের প্রাপ্য অধিকার। এভাবে যদি ধর্ষণ বা উত্যক্ত হবার ভয়ে
বিচার না পেয়ে সকল নারীকে ঘরে বসে থাকতে হয়, তাহলে আমাদের সমাজের উন্নতি সম্ভব হবে
কি?? না, কখনোই না । যখন কারো নায্য
বিচার পাবার জন্য জনগণকে একসাথে চিৎকার করে বলতে হয় “উই ওয়ান্ট জাস্টিস” তখন
বুঝতে হয় আমাদের সমাজ অনেক পিছিয়ে আছে, তখন বুঝতে হয় আমাদের সমাজে সহজে কিছুর নায্য
বিচার পাওয়া যায় না। এভাবে আর কতবার
চিৎকার করে সবাইকে স্লোগান দিতে হবে! আর স্লোগান দিতেই হবে বা কেন! এটা তো আমাদের প্রাপ্য
অধিকার। লজ্জা হয় এধরণের
সমাজব্যবস্থার উপরে। কখনো কি ভেবে
দেখেছেন আজকের শিশুদের এই সমাজের প্রতি কি ধরণের মানসিকতা তৈরি হচ্ছে? আমরা সবকিছুরই
সুষ্ঠ বিচার চাই । আর এটা আমাদের
স্লোগান নয়, এটা আমাদের অধিকার ।
0 মন্তব্যসমূহ