টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দ্বিতীয় দফা বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যাকবলিত হয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক বিদ্যালয়। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এসব বিদ্যালয়ে কার্যক্রম শুরু হতে অনেকটা বিলম্ব হবে এবার। সেই সঙ্গে বন্যায় আক্রান্ত বিদ্যালয়গুলোতে দ্বিতীয় দফার বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় দফার বন্যায় সিলেটে ৪৮৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এরমধ্যে ২২৬টি বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় ২৫৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৪৮টি বিদ্যালয়। বন্যায় আক্রান্ত বিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম শুরু করতে অনেকটা সময় লেগে যেতে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ওপর।
বিভাগীয় শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ১৩টি উপজেলা নিয়ে সিলেট। এসব উপজেলায় রয়েছে ১৪৭৭টি বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে বন্যাকবলিত হয়েছে ৪৮৯টি বিদ্যালয়। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৩ উপজেলার ২২৬টি স্কুল। বন্যাকবলিত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সিলেট সদরে ৩৬, বিশ্বনাথে ৩২, বালাগঞ্জে ৪৮, ফেঞ্চুগঞ্জে ১৬, গোলাপগঞ্জে ২৫, বিয়ানীবাজারে ২৪, জকিগঞ্জে ১২, কানাইঘাটে ৫৬, জৈন্তাপুরে ২৭, গোয়াইনঘাটে ১০৩, কোম্পানীগঞ্জ ৬৮, দক্ষিণ সুরমা ১২ ও ওসমানীনগর উপজেলায় ৩০টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়।
আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে সিলেটের এই ১৩ উপজেলার ২২৬টি বিদ্যালয় ব্যবহৃত হচ্ছে। এরমধ্যে সিলেট সদরে ১৪, বিশ্বনাথে ২১, বালাগঞ্জে ১৯, ফেঞ্চুগঞ্জে ১৩, গোলাপগঞ্জে ১৪, বিয়ানীবাজারে ২২, জকিগঞ্জে ৬, কানাইঘাটে ১৯, জৈন্তাপুরে ১০, গোয়াইনঘাটে ২২, কোম্পানীগঞ্জ ৩৩, দক্ষিণ সুরমা ১৩ ও ওসমানীনগর উপজেলায় ২০টি বিদ্যালয়।
এ ছাড়া ১১টি উপজেলা নিয়ে সুনামগঞ্জ। এসব উপজেলায় রয়েছে ১৪৭৫টি বিদ্যালয়। এরমধ্যে বন্যাকবলিত ২৫৯টি বিদ্যালয়। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১১ উপজেলার ১৪৮টি বিদ্যালয়। বন্যাকবলিত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদরে ২০টি, দোয়ারাবাজারে ৭০, বিশ্বম্ভরপুর ২৬, ছাতক ৫১, তাহিরপুর ১১, জামালগঞ্জ ২৬, ধর্মপাশা ৪, শাল্লা ২০, দিরাই ২, জগন্নাথপুর ২৩ ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৬টি বিদ্যালয় রয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলার ১৪৮টি বিদ্যালয় ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদরে ১৫টি, দোয়ারাবাজারে ৪০, বিশ্বম্ভরপুর ১২, ছাতক ২৩, তাহিরপুর ৩, জামালগঞ্জ ১৫, ধর্মপাশা ২, শাল্লা ৫, দিরাই ৮, জগন্নাথপুর ১৪ ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ১১টি বিদ্যালয় রয়েছ।
স্কুলশিক্ষার্থী আদ্রিকা রায় কথার মা সঞ্চিতা রায় কালবেলাকে বলেন, বন্যায় স্কুল কবলিত হওয়ায় পড়ালেখাও থমকে আছে। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সিলেটের স্কুলগুলোতে। কবে স্কুল খুলবে তা বলতে পারছেন না কেউই।
বিভাগীয় শিক্ষা অফিস সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন কালবেলাকে জানান, এবারের বন্যার ধরনটা মারাত্মক। সিলেট ও সুনামগঞ্জে সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ কত তা বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তবে এবার ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে।
তিনি বলেন, বন্যায় আক্রান্ত বিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম শুরু করতে অনেকটা সময় লেগে যেতে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উপর। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সিলেটে ৪৮৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২৬টি বিদ্যালয়ে বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় ২৫৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত হয়েছে। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৪৮টি বিদ্যালয়।
মো.রাকিব হাসান হৃদয়
সুনামগঞ্জ
আপনার মতামত লিখুন :