একই দিনে নেত্রকোনা জেলার দুই উপজেলায় পানিতে ডুবে চার (৪) শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার(২৩ জুন) দুর্গাপুর পৌর শহরের তেরী বাজার এলাকার সোমেশ্বরী নদীতে দাদির সঙ্গে বেড়াতে এসে সমবয়সী শিশুদের সাথে নদীতে গোসল করার সময় পানিতে ডুবে জাহাঙ্গীর(৫) নামের এক শিশু এবং কুল্লাগড়া ইউনিয়নের শশারপাড় গ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে আফিয়া(২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত শিশু জাহাঙ্গীর ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার কুল্লাতলী গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে। জহিরুল পেশায় রিকশা চালক। নিহত আফিয়া কুল্লাগড়া ইউনিয়নের শশারপাড় গ্রামের ইমরান মিয়ার মেয়ে।
একইদিনে পূর্বধলা উপজেলায় পানিতে ডুবে তাসকিন (৭) ও নোমান (৮) দুই শিশু মারা যায়। তাসকিন সদর উপজেলার সাতপাই (উল্লা বাড়ি) গ্রামের মোঃ আল মামুনের ছেলে ও নোমান পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের পাঁচমারকেন্ডা গ্রামের মোহাম্মদ আলী’র ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের তেরী বাজার এলাকায় নাতিকে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন উম্মে হানি (দাদি)। গতকাল রবিবার বাড়ি ফিরে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আজ সকালে শিশু জাহাঙ্গীর নাস্তা করে সমবয়সী দুই শিশুর সাথে বাড়ির সামনেই সোমেশ্বরী নদীতে গোসলে যায়। গোসল করার সময় জাহাঙ্গীর পানির নিচে তলিয়ে যায়। অন্য দুই শিশু বাড়ি ফিরে জাহাঙ্গীর নদীতে ডুবে যাওয়ার বিষয়টি সবাইকে জানালে পরিবারের লোকজন নদীতে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করলে করলে, খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শিশু জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।।
শিশু আফিয়া বাড়ির উঠানেই খেলাধুলা করছিল। ঘরে কাজে ব্যস্ত তাঁর ছিল বাবা-মা। হঠাৎ আফিয়াকে উঠানে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে একপর্যায়ে বসতবাড়ির পাশের পুকুর থেকে শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরে আজ রোববার সকালে তাদের নানী পারভিন আক্তার বাড়ির ৩০০ গজ উত্তর পাশে কংস নদের শাখা দেইড়া গাং নদীতে ভাসমান দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। এই সংক্রান্তে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নোমানের বাবা-মায়ের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে সে নানার বাড়িতে বসবাস করত
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব জানান, শিশু আফিয়ার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং শিশু নোমানের মরদেহ থানা হেফাজতে রয়েছে। তাঁর বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে তাঁরা আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম প্রতিটি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :