শিশু অধিকার থেকে বঞ্চিত পতিতাপল্লীর শিশুরা


Admin প্রকাশের সময় : ১০/০৩/২০২০, ৯:২০ PM
শিশু অধিকার থেকে বঞ্চিত পতিতাপল্লীর শিশুরা

এস.এম. মানজুরুল ইসলাম সাজিদ,বাগেরহাট:

সকল শিশুর, সকল পরিস্থিতিতে, সবসময়ে, সবখানে তাদের পরিপূর্ণ বিকাশের অধিকার রয়েছে। কিন্তু বাগেরহাট পতিতাপল্লীতে জন্ম নেওয়া শিশু গুলো পরিপূর্ণ অধিকার বিকাশ  করার সুযোগ পাচ্ছে না।

বাগেরহাট শহরের ঘোষপট্টি পিছনে অবস্থিত বাগেরহাট পতিতালয়। যেখানে রয়েছে প্রায় ৪০ জন  যৌনকর্মী। রয়েছে পতিতা পল্লীতে জন্ম নেওয়া অারও ৪৪ সন্তান। যার মধ্য ২৪  জন ছেলে এবং ২১ জন মেয়ে। যারা দেহ ব্যবসায়ের পরিবেশের মধ্যেই বেড়ে উঠছে।

বর্তমানে খদ্দের কম হওয়ায়,ইনকাম কম, সে জন্য কর্মীদের  পাশাপাশি , সন্তানেরাও ঠিক মত খেতে পারে না। শিশু গুলো বাইরে বের হতে পারে না কারণ তার মা যৌনকর্মী। সরকারি কোন অনুমোদন নাই বাগেরহাট শহরের পতিতা পল্লীর। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগেরহাট পতিতা পল্লীর একজন জানান, “আমরা আসলে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা পাই না। গর্ভবতী হলে সরকার থেকে কার্ড করে দেয় আমরা কিছু টাকা পাই। আর আমাদের পতিতাপল্লীর শিশুরা বাইরে যেতে পারে না, গেলে তাদের কে ছোট করে দেখা হয়। স্কুলে ভর্তি করতে হয় পরিচয় গোপন করে, অন্যকে অভিভাবক বানিয়ে আমরা স্কুলে ভর্তি করি। এক্ষেত্রেও রয়েছে যন্ত্রণা, যার পরিচয় দেওয়া হয় তাকে নিয়ম করে মাসোহারা দিতে হয়। অামাদের পল্লীর ভিতর এনজিওর স্কুল থাকলেও তারা ঠিক মত পড়ালেখা করায় না। চিকিৎসা সহ, দাফন কাফন করতে গেলে পরিচয় গোপন রেখে করা লাগে। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক।আমরা সরকারের কাছে সকল অধিকার চাই।”

পতিতাপল্লীর শিশুদের নিয়ে কথা হয় বাগেরহাট জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আসাদুর রহমান শিশু বার্তাকে বলেন, “সকল শিশুরই সমান অধিকার আছে। হোক সে দরিদ্র, ধনী কিংবা ওই পতিতাপল্লীর শিশু।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও এই সকল পিছিয়ে পড়া শিশুদের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। আমার বাগেরহাট জেলা শিশু বিষয়ক অফিস এর যে সকল সুযোগ-সুবিধা আছে তা, এই সব পিছিয়ে পড়া শিশুর পাশাপাশি সকল শিশুই পাবে।”

কচুয়ার সরকারি শহীদ শেখ আবু নাসের মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক সুযশ কান্তি মন্ডল শিশু বার্তাকে বলেন, “যৌনকর্মী পল্লীতে জন্ম নেওয়া শিশুদের স্বাভাবিক ও নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষের উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে অাসা উচিত।”

সমাজ পতিতাপল্লীর মায়েদের খারাপ মনে করে। তাই তাদের প্রিয় সন্তানকে বুকে নিয়ে অভাবের কড়াল গ্রাস সহ্য করে বেঁচে থাকতে হয়। সমাজে আর পাঁচটা শিশুর মতো শিশু অধিকার পেতে চায় পতিতাপল্লীর শিশুরা।।