মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গাংনী উপজেলার বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়১৯৭০ সালে। বেশ দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়টির মূল ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী। বেশির ভাগ কক্ষের দেয়াল ও ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। দেয়ালের বাইরের দিকে গজিয়েছে গাছ।
ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর পরিদর্শন করে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের নতুন একটি ভবনও তৈরি হয়েছে। তবুও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতেই চলছে এইচএসসি পরীক্ষা।
গাংনী উপজেলার বামন্দী বাসস্ট্যান্ডের পাশেই বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এই কেন্দ্রে ৬১৬ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। ওই ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ভেবে কেন্দ্র কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এরই মধ্যে ৫৩১ জন পরীক্ষার্থীকে পাশের ভবনে সরিয়ে নিয়েছেন। তবে এখনো ৮৫ জন শিক্ষার্থী নিয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পরীক্ষা।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন ভবনটি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি বলেই সেটি ব্যবহার করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে পুরোনো ভবনে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, হস্তান্তর না হওয়ার কারণটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অজুহাত মাত্র। এ রকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরীক্ষা নেয়ায় তারা শঙ্কিত।
বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী শিশির আহমেদ জানান, ‘আমাদের বাড়ির পাশেই অবস্থিত এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেও পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। ওই ভবনে ক্রিকেট বল গিয়ে লাগলেই পলেস্তারা খুলে পড়ে।’
আরেক পরীক্ষার্থী শারমিন আক্তার জানায়, তারা যে ভবনটিতে পরীক্ষা দিচ্ছে তার দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পরীক্ষার কেন্দ্র করা ঠিক হয়নি বলেই মনে করছে পরীক্ষার্থীরা।
কেন্দ্র কর্মকর্তা ও বামন্দী নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলাউদ্দীন জানান, তিনি মাসখানেক ধরে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব পেয়েছেন। এরই মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলেই প্রশাসনিক কার্যক্রম সরিয়ে নেয়া হয়েছে পাশের ভবনে।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, পরীক্ষা শেষে শিক্ষা প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করবেন। আর চারতলা নতুন ভবন এখনো হস্তান্তর না হওয়ায় সেখানে কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।’
জানতে চাইলে গাংনীর উপসহকারী প্রকৌশলী শাহীনুজ্জামান জানান, তিনিও ভবনটির পলেস্তারা খসে পড়তে দেখেছেন। তবে ভবনটির বিষয়ে তারা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর হাবিবুল বাশার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির ব্যাপারে তাকে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানাননি। এখন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী খানম বলেন, ‘ভবনটির অবস্থা দেখে আমি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। বিষয়টি লিখিতভাবে জানানোর কথাও বলেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :