একাদশের বই নিয়ে নতুন তৈরি হয়েছে জটিলতা। এ স্তরের সব বইয়ের দাম আগের বছরের চাইতে নতুন বছরে প্রায় ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন মুদ্রণকারীরা। এ প্রস্তাবে রাজি নয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
এনসিটিবি’র অনুমোদিত চারটি বইয়ের দাম ১৫ শতাংশ বাড়াতে রাজি হলেও তা মানতে রাজি হননি মুদ্রণকারীরা।
সে কারণে নির্ধারিত সময়ে উচ্চ মাধ্যমিকের নতুন বছরের বই পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আগামী দুই ফেব্রুয়ারি থেকে এ স্তরের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিকের বই তৈরির সংকট নিরসনে গত সোমবার (৯ জানুয়ারি) এনসিটিবি’র সঙ্গে মুদ্রণকারীদের বৈঠক হয়। কাগজ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে সব বইয়ের দাম ২৭ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
এ প্রস্তাবে রাজি নয় এনসিটিবি। বইয়ের দাম বেশি বাড়ালে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের ওপর বেশি চাপ তৈরি হবে। সে কারণে এনসিটিবি’র অনুমোদিত বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি ও বাংলা সহপাঠ বইয়ের দাম ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধিতে রাজি হলেও এটি মানতে নারাজ মুদ্রণকারীরা।
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে একাদশের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কবে থেকে বই ছাপা হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। ২৭ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি করা না হলে বই ছাপাতে নারাজ মুদ্রণকারীরা। তারা নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে সভা থেকে বের হয়ে যান।
এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, বইয়ের দর নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা কাগজ-কালিসহ অন্যান্য মুদ্রণ সামগ্রীর বাজার যাচাই করেন। এ কারণ ১৫ শতাংশ দর বাড়ানোর কথা প্রকাশকদের জানান তারা। কিন্তু তারা এতে রাজি হয়নি। এখন বোর্ড বৈঠক করে এ ব্যাপারে প্রকাশকদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
তিনি বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের বইয়ের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য মুদ্রণকারীরা জাতীয় প্রতিযোগিতা কমিশনে আবেদন করেছেন। সেখানে এনসিটিবি’র একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) এ বিষয়ে কমিশন থেকে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা রয়েছে। এরপর আমরা বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। এক্ষেত্রে বইয়ের দাম ১৫ শতাংশের বেশি বাড়ানোর পক্ষে না। মূল্য বেশি না বাড়িয়ে নির্ধারিত সময়ে যেন শিক্ষার্থীরা বই হাতে পান সেই চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানায়, প্রকাশকরা বৈঠকে আরও কিছু দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নোট-গাইড ছাপা কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের বইয়ের মুদ্রণ কাজ শেষ করার স্বার্থে এরই মধ্যে এনসিটিবি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নোট-গাইড না ছাপতে প্রকাশকদের অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিনামূল্যের বই ছাপানো শেষ হয়নি। তাই ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার ওই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়। প্রকাশকরা এটি ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণের অনুরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত এনসিটিবি এই দাবি মেনে নিয়েছে।
এছাড়া নকল ঠেকাতে এইচএসসির ২০২৩ সালের বইয়ের প্রচ্ছদ পরিবর্তন, ক্লাস শুরুর এক সপ্তাহ আগে বই বাজারজাত করার অনুমতি দেওয়াসহ আরও কিছু দাবি করেছেন প্রকাশকরা। এসব দাবি এনসিটিবি মেনে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :