শিক্ষা ডেস্ক
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্বের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বিকল্প হিসাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে পাঠদান চলছে বেশকিছু দেশে। কিন্তু সামর্থ্যের অভাবে এই দূরশিক্ষণে অংশ নিতে পারছে না বিশ্বের স্কুলে পড়ুয়া অন্তত ৪৬ কোটি ৩০ লাখ শিশু।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ নতুন এক প্রতিবেদনে স্কুলবঞ্চিত শিশুদের এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বৃহস্পতিবারের এই প্রতিবেদনে বলা হয়, দূরশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মতো প্রযুক্তিগত সুবিধা নেই এই এক-তৃতীয়াংশ শিশুশিক্ষার্থীর। তাছাড়া,দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে ধনী ও গরিব শিক্ষার্থীর মধ্যকার প্রকট বৈষম্যও দেখা গেছে।
বিশ্বে অঞ্চলভেদে শিশুদের অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ-সুবিধার মধ্যে অসমতা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাব-সাহারা আফ্রিকায় স্কুলে পড়ুয়া যত শিশু আছে তাদের অর্ধেকই দূরশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
বিশ্বের দেশে দেশে করোনাভাইরাসের কারণে দেশজুড়ে এবং স্থানীয়পর্যায়ে লকডাউনের বিধিনিষেধের আওতায় প্রায় ১৫০ কোটি স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুলশিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্কুলবন্ধ থাকার এই সময়ে ১০০টি দেশের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে দূরশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য ঘরে থাকা প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও হাতিয়ার বিশেষত ইন্টারনেট,রেডিও,টিভির সহজলভ্যতার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন তৈরি করেছে ইউনিসেফ।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে,পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকার ৬ কোটি ৭০ লাখ,পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার ৫ কোটি ৪০ লাখ,পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৮ কোটি,মধ্যপাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার ৩ কোটি ৭০ লাখ,দক্ষিণ এশিয়ার ১৪ কোটি ৭০ লাখ,পূর্ব ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ার ২ কোটি ৫০ লাখ,এবং ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারবিয়ান অঞ্চলের ১ কোটি ৩০ লাখ শিশু- অর্থাৎ,সব মিলিয়ে ৪৬ কোটি ৩০ লাখ (৩১ শতাংশ)- স্কুলশিশু দূরশিক্ষণে অংশ নিতে পারেনি।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েত্তা ফোরে বলেছেন,কয়েক মাস ধরে বিপুল সংখ্যক স্কুলশিশুর পড়াশোনা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা তার কথায়,“এক বৈশ্বিক শিক্ষা জরুরি অবস্থা। আগামী কয়েক দশক ধরে যার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সমাজ ও অর্থনীতিতে।”
স্কুলশিশুদের এই ক্ষতির কথা ভেবে অনেক দেশই সম্প্রতি নিরাপদ ব্যবস্থা নিয়ে শিশুদের আবার স্কুলে ফেরানোর কথা ভাবছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনাও।
এরই মধ্যে ইউনিসেফ বিশ্বে দূরশিক্ষণ বঞ্চিত বিপুল সংখ্যক শিশুর সাম্প্রতিক ওই পরিসংখ্যান দিল। শিশুদের স্কুলে ফেরা কতটা জরুরি-এ পরিসংখ্যানই তা বলে দিচ্ছে।
সি/এন/ আর/দৈনিকশিক্ষা
আপনার মতামত লিখুন :