প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দেশের ৯৯ শতাংশ শিশু: ইউনিসেফ


শিশু বার্তা ডেস্ক প্রকাশের সময় : ০৬/০৫/২০২৪, ২:৩৯ PM
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দেশের ৯৯ শতাংশ শিশু: ইউনিসেফ

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা ক্রমেই বেড়েই চলেছে। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত আর্দ্র মাসগুলোতে এই পরিস্থিতি মানুষের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী, নবজাতক ও শিশুর ক্ষেত্রে উচ্চ তাপজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এমতাবস্থায় জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ৩ কোটি ৫৫ লাখ শিশু প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হবে, যা দেশের মোট শিশুর ৯৯ শতাংশ।

ইউনিসেফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাপমাত্রা প্রতি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধিতে অপরিণত শিশু জন্মের ঝুঁকি ৫ শতাংশ বাড়ে। পাশাপাশি অন্য সময়ের তুলনায় তাপপ্রবাহের সময় এই হার ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর অর্থ, তাপপ্রবাহের সময়ে অপরিণত শিশু জন্মের ঝুঁকি অনেক বেশি। অর্থাৎ তাপপ্রবাহ যত বেশি এবং যত তীব্র হবে ঝুঁকির মাত্রা তত বাড়বে।

বাংলাদেশে অপরিণত শিশু জন্মের হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি, ১৬ দশমিক ২ শতাংশ। যেটি তাপপ্রবাহে আরও বৃদ্ধি পায়। ইউনিসেফের সাম্প্রতিক প্রক্ষেপণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণের ফল হিসেবে, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের মোট শিশুর ৯৯ শতাংশ বা ৩ কোটি ৫৫ লাখ শিশু প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হবে। অর্থাৎ গড়ে বছরে ৪ দশমিক ৫ বা তার বেশি তাপপ্রবাহ হবে। ২০২০ সালের তুলনায় যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি।

এর আগে ২০২০ সালে ২৬ লাখ শিশু (দেশের মোট শিশুর ৫ শতাংশ) এ ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছিল। ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি তিন শিশুর একজন বা প্রায় ২ কোটি শিশু প্রতিদিন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চলমান তাপপ্রবাহ, বন্যা, নদী ভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট অন্যান্য পরিবেশগত অভিঘাতের মতো বিরূপ আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতিরও শিকার হচ্ছে।

ইউনিসেফ বলছে, শিশুদের ওপর তাপপ্রবাহের প্রভাব অনেক ধরনের হতে পারে। তাই ইউনিসেফ শিক্ষা খাতে এর ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তা করার ব্যাপারে কাজ করছে। সেই সঙ্গে ইউনিসেফের কারিগরি সহায়তায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ‘শিক্ষায় জলবায়ু পরিবর্তন’ কাঠামো গড়ে তুলতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরগুলোর সঙ্গে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক শিক্ষাকে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা। সেই সঙ্গে এর মাধ্যমে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত- এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তোলা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত আর্দ্র মাসগুলোতে তাপপ্রবাহ অনেক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। ইউনিসেফ জলবায়ু সম্পর্কিত স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।