তানজিম আশরাফ রাতুল, শিশুবার্তা প্রতিনিধি, নেত্রকোনাঃ
গত ১৮-০৭-২০১৯ খ্রি. নেত্রকোণা পৌরসভাধীন কাটলী এলাকায় সজিব(৮), পিতা-রইছ উদ্দিন, সাং-কুমারপুর, থানা ও জেলা-নেত্রকোণাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকারী রবিন মিয়া(৩০), পিতা-এখলাছ মিয়া, সাং-কাটলী, থানা ও জেলা-নেত্রকোণা একই এলাকার অধিবাসী।
উল্লেখ্য,হত্যাকারী রবিন মিয়া নেত্রকোণা পৌরসভাধীন কাটলীস্থ জনৈক কায়কোবাদ, পিতা-মৃত মোশারফ হোসেন এর নির্মানাধীন ভবনের ৩য় তলায় পূর্ব পার্শ্বে টয়লেটে শিশু সজিবকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। শিশু সজিবের হত্যাকারী রবিন নেত্রকোণা পৌরসভাধীন নিউটাউন অনন্ত পুকুরপাড়ে তারেক মিয়ার বাসার গেটের সামনে গেলে স্থানীয় লোকজন তার গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। গণপিটুনিতে রবিন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারপূর্বক ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে বেলা ১৫.২৫ ঘটিকার সময় নেত্রকোণা পৌরসভাধীন কাটলীর জনৈক কায়কোবাদ, পিতা-মৃত মোশারফ হোসেন এর নির্মানাধীন ভবনের ৩য় তলায় পূর্ব পার্শ্বে টয়লেটে একটি মাথা বিহীন দেহ পাওয়া যায় যা শিশু সজিবের বলে তার পিতা-মাতা সনাক্ত করে। পুলিশ উভয় লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতপূর্বক ময়না তদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি তে নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জনাব জয়দেব চৌধুরী মহোদয় জানান, হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলে ধরা ও পদ্মা সেতুর গুজবের সাথে মিশিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে, যা নিতান্তই বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য। তিনি আরো বলেন, ধারণা করা হচ্ছে মনের পুরনো কোন জেদ বা বিকৃত মানসিকতা থেকেই সজিবের সাথে নির্মম ও বর্বরোচিত এ ঘটনা ঘটেছে। শিশু সজিবের গলা কাটার বিষয়টি শুধুই একটি হত্যাকান্ড। এর সাথে ছেলে ধরা বা পদ্মা সেতু গুজবের কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে ঘটনার পরপরই নেত্রকোণা জেলা পুলিশ এবং ময়মনসিংহ রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সজিবের পিতা রইছ উদ্দিন নেত্রকোণা মডেল থানাধীন আমতলা ইউনিয়নের কুমারপুর সাকিনের বাসিন্দা। বর্তমানে নেত্রকোণা পৌরসভাধীন কাটলিস্থ ডাক্তার মোঃ জালাল উদ্দিন এর বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে। রবিন পেশায় রিক্সা চালক এবং মাদকাসক্ত। শিশু সজিবের পিতা রইছ উদ্দিনও পেশায় একজন রিক্সা চালক। শিশু সজিবের পিতা রইছ উদ্দিন এবং রবিন উভয়েই পূর্ব পরিচিত এবং একই এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার মহোদয় আরো জানান,
ইহা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ঘটনাটি পারিবারিক দ্বন্দ্ব অথবা পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা হতে পারে। এ সংক্রান্তে নেত্রকোণা মডেল থানায় ০২ টি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। সজিব হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা নং-১৯, তারিখ-১৮-০৭-২০১৯ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ডবিধি এবং গণপিটুনিতে রবিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা নং-২০, তারিখ-১৮-০৭-২০১৯ খ্রিঃ, ধারা-৩০২ দন্ডবিধি। এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।
আপনার মতামত লিখুন :