রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাংলাদেশ সফর


মো: আসাদুজ্জামান নাদিম: প্রকাশের সময় : ২০/০৯/২০২২, ৭:১২ PM
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাংলাদেশ সফর
ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিলো গভীর। তিনি দুই বার ঢাকা সফরে এসেছেন, সেই সফরে এ দেশের মানুষের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পায় । রানীর সম্মানে ১০ টাকা মূল্যের একটি স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ সরকার। ১৯৬১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান আমলে ঢাকায় এসেছিলেন রানী এলিজাবেথ। সে সময় তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপও তার সঙ্গে ছিলেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধায় তাঁরা অবস্থান করেছিলেন ।
রানী এলিজাবেথ সে সময় বুড়িগঙ্গা নদীতে স্টিমারে চড়ে নৌ বিহার করেন। তিনি যখন নৌ বিহারে ছিলেন, তখন বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ে হাজার হাজার মানুষ হাত নেড়ে রানীকে স্বাগত জানান। তিনি সেবার আদমজী জুট মিলও পরিদর্শন করেন।
দ্বিতীয়বার ১৯৮৩ সালের ১৪-১৭ নভেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ সফর করেন রানী এলিজাবেথ। সে সময় গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার প্রত্যন্ত অঞ্চল বৈরাগীরচালা আদর্শ গ্রামে তিন গ্রামাঞ্চলের নারীদের দেখতে গিয়েছিলেন।তিনি প্রাথমিক স্কুল ও পরিদর্শন করেন। রানীকে গ্রামের মানুষ একটি প্রতীকী রূপার চাবি দিয়েছিলেন যাতে রানী যে কোনো সময় এই গ্রামে আসতে পারে, তার জন্যে এই গ্রামে সকল দরজা খোলা।
ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে আসেন রানী দ্বিতীয় এলিাবেথ। হাজারো ফুল আর রঙিন কাগজ দিয়ে  সাজানো হয়েছিল ট্রেনটিকে ।এর পর রানী স্টেশন থেকে ২০০-৩০০ ফুট পায়ে হেঁটে যান। এ সময় গ্রামের স্কুলের বাচ্চাসহ সবাই তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান।স্টেশন থেকে গাড়ি করে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশের সবুজ গাছপালা দেখে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ মুগ্ধ হন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ গ্রামের একটি কাঠাল বাগানে বসেন , সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন। রানীকে এই সময় আইমুনেসা নামের একজন মুড়ি ভাজা দেখার পর ধারাবাহিক ভাবে কাপড় বোনা, হাঁস মুরগি পালন দেখান গ্রামের সাধারণ মানুষ। জেলেরা রানীকে মাছ মারা দেখান পুকুরে, জেলেরা যখন জাল টানছিলেন তখন একটা বড় মাছ জাল থেকে লাফ দিয়ে রানী এর পায়ের কাছে এসে পরে।
রানি আসার কারণে এই গ্রামে ১৯৮৩ সালে বিদ্যুৎ আসে। ১০০০ ওয়াটের বাতি জ্বলে,ঘরে ঘরে ৬০ ওয়াটের বাতি জ্বলে। সেদিন থেকে ওই গ্রাম থেকে হারিয়ে যায় হারিকেন, কেরোসিনের কুপি না। ১৯৮৩ সালের ১৬ই নভেম্বর এখনো স্মরণীয় হয়ে আছেন বাংলার মানুষের কাছে।