সন্তানের ফলাফল অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না: প্রধানমন্ত্রী


শিশু বার্তা ডেস্ক: প্রকাশের সময় : ২৮/০৭/২০২৩, ১:৫৩ PM
সন্তানের ফলাফল অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না: প্রধানমন্ত্রী

সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল অন্যদের সঙ্গে তুলনা না করে বরং তার দিকে আরও বেশি যত্নশীল হতে অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে গণভবনে ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

২০২৩ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় আগের বছরের চেয়ে এসএসসিতে পাশের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা- দুটোই কমেছে।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে পা রাখার পদক্ষেপ বলে অনেক অভিভাবকই সন্তানের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে চিন্তিত থাকেন। সেই সূত্রে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিজের সন্তানের ফলাফলের তুলনা দিয়ে অভিভাবকরা তাদের অজান্তেই অলিখিত এক প্রতিযোগিতার জন্ম দিচ্ছেন। এতে প্রত্যাশার বোঝা চাপিয়ে দিয়ে নিজের অজান্তেই অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করছেন। তাই পরীক্ষায় সন্তানের ফলাফল যেমনই হোক, অন্যদের সঙ্গে তুলনা করে তাকে কষ্ট না দিয়ে বরং তার দিকে আরও বেশি যত্নশীল হতে অভিভাবকদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “অযথা ‘অমুকের ছেলে ভালো করেছে, তুমি পারলা না কেন’, এই তুলনাটা যেন না করে। এটা করা ঠিক না। কারণ সবার সব রকম মেধা থাকে না, সবার সেই চিন্তাভাবনার শক্তি থাকে না। যার যেটা দক্ষতা, সে সেই অনুযায়ীই পড়বে। যতটুকু সম্ভব, তাদের সহযোগিতা করা উচিত।”

ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা কৃতকার্য হতে পারেনি, তাদের বলব- হতাশ না হয়ে আগামীবার আরো ভালোভাবে পাশ করতে হবে, সেজন্য যেন তারা প্রস্তুত হতে পারে। মনে দুঃখ নেওয়ার কিছু নেই। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করলেই তারা ভালো ফলাফল করতে পারবে। একটু পিছিয়ে পড়লেও ক্ষতি নেই, তারা আবার এগিয়ে যেতে পারবে।”

অভিভাবকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অভিভাবকদের বলব, তাদের কখনো বকাবকি করবেন না। তাদেরও মনে কষ্ট আছে। আদর দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে তারা যেন পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনার দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে অভিভাবকদের তিনি বলেন, “শিক্ষা এমন একটা সম্পদ যেটা কেউ কেড়ে নিতে পারে না, সবসময় কাজে লাগবে।

গত ৩০ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার এসএসসি পরীক্ষায় ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা কারিগরি বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ৭২,১৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৪৯.৩২% ছাত্র ও ৫০.৬৮% ছাত্রী।

পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রদের সংখ্যা কমে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, “ছেলের সংখ্যা কেন কমে যাচ্ছে একটু ভেবে দেখা দরকার। এরা কি স্কুলে যাচ্ছে না? পরীক্ষার্থী সংখ্যা কেন কমে গেল? আমার মনে হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তা ভালোভাবে দেখা দরকার।”

দেশের ছেলেমেয়েরা যাতে শিক্ষা-দীক্ষায় চিন্তা-মননে একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে, সেভাবেই সবাইকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অনেক মেধাবী” হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের দরকার শিক্ষার গুণগত মান আরও উন্নত করা। সারাবিশ্বের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন চলতে পারে।”

ঢাকা/ডিএমএস