সেই তো ছিলাম ছোট্ট আমি,
কয়েক বছর আগে;
এখন আমি অনেকটা বড়,ছেলেবেলা পাছে ফেলে।
হারিয়ে ফেলেছি সেই দিনগুলি,
হারিয়ে ফেলেছি আলো;
হারিয়ে ফেলেছি খেলার সাথী,
আরো কত কি যেন!
মনে পড়ে আজও স্মৃতিময় সেই রৌদ্রজ্বল দিন;
মনে পড়ে সেই বৃষ্টিভেজা মধুময় রাতদিন।
কভু মনে পড়ে!
পথ – ঘাট আর সেই খেলার মাঠ;
কভু মনে পড়ে,
ধান ক্ষেত আর তারা ভরা সেই রাত।
মনে পড়ে আজও মায়ের হাতের মুঠোভরা ডাল-ভাত,
মনে পড়ে তার মুখের ঐ মিষ্টি মধুর রাগ।
খাওয়াতো যখন মা আমাকে,
খেতে চাইতাম না আমি;
বলে কয়ে মোরে খাওয়াতো সে যে,
না খেয়ে ভাত- পানি।
বলতো আমার সব অভিলাষ পূর্ণ করবে সে;
আমি বলতাম, ‘মা, আকাশের ঐ চাঁদটা এনে দে’!
পড়তে আমার লাগত না ভালো, মা দিত বকুনি;
মাঝে মাঝে দিত কিল- থাপ্পড়,
তবু আমি শুনি নি।
থাপ্পড় খেয়ে ঘুমিয়ে যেতাম,
পাশে শুয়ে পড়ে মা;
গাল টেনে মোরে চুমু খেয়ে নিত,
বলতো কতো কি না!
বিকেল বেলা খেলার সাথীরা
নিয়ে যেত মোরে দূরে।
সন্ধেবেলা মা খুঁজত , বলে, ওরে!
খুঁকি নেই মোর ঘরে!
খুঁজে নিয়ে সে আসত বাড়িতে,
দিত আরো বেশি বকা;
হাত মুখ মোর ধুয়িয়ে দিত,
খেতে দিত রুটি সেকা;
তবু কখনো হয়নি মাকে,
বুক ভরে ভালোবাসা,
এইসব আজ ভেবে ভেবে তবু,
মিছে বুকে বাধি আশা।
এই ভাবে আজ কত দিন গেল,
বড় হয়ে গেছি আমি!
স্কুলে যাই প্রত্যহ আর খেলতে যাই না আমি।
আজ মোর সেই ছেলেবেলা গেছে কোন আধারে ঢেকে?
আনতে পারি না ফিরিয়ে আজ আর কেদে সারা হয়ে বাকে।
শোন ছেলে মেয়ে, বলি সকলকে; ছেলেবেলা মধুময়।
একবার যদি হারাও তবে,ফিরে আর পাবার নও।
লেখক: ইসরাত জাহান
খাদ্য,প্রযুক্তি ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: মাহমুদুল হাসান তানজীম
আপনার মতামত লিখুন :