শিশুশ্রম মোকাবেলায় সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিতে হবে


Admin প্রকাশের সময় : ১২/০৬/২০২২, ১০:০০ PM
শিশুশ্রম মোকাবেলায় সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিতে হবে

মোঃ শাফায়াত হোসেন (সিয়াম), ভোলা:
জাতিসংঘ প্রণীত শিশু অধিকার সনদে ১৮ বছরের কম বয়সী প্রত্যেককে শিশু বলা হয়। বাংলাদেশেও ১৮ বছরের কম বয়সী সবাইকে শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে। সাধারণত এই শিশুরা যখন শ্রমের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করে বা অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যে শ্রম দেয় তখন তাকে  বলা হয় শিশুশ্রম।
প্রত্যেক শিশুর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অসিম সম্ভাবনা। শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ।  তারা বড় হয়ে সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব গ্ৰহণ করবে একদিন । তাই, শিশুদের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ দৃষ্টি দিতে হবে।
যে বয়সে শিশুর বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা, সে বয়সে অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল, দরিদ্র পরিবারের শিশুরা যুক্ত হয় ‍শিশু শ্রমের সাথে। জীবনের শুরুতে তাদের বের হতে হয় জীবিকার খোঁজেদৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্য অর্থ উপার্জন করতে শুরু হয় জীবনের নানা সংগ্ৰাম । অনেক অল্প বয়সেই বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয় শিশু শ্রমিকরা । ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করে থাকে, ইটভাঙ্গা সহ তারা বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে তারা। বিভিন্ন সময়ে এসকল দরিদ্র শিশুরা ভিক্ষাবৃত্তিও করে থাকে। অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের শিশুরা  এভাবেই দরিদ্র পরিবারের শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠেছে অমানবিকতায়।
বিশ্বের সকল দেশেই শিশু-অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় শিশু নীতি প্রনয়ন করেন।আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে শিশু-অধিকার সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণাও করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক শিশু- অধিকার সনদে স্বাক্ষর করে জাতীয় শিশুনীতি ঘোষণা করেছে এবং শিশুশ্রম বন্ধকরনে ব্যাপক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন। 
সরকার  বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি কার্যক্রম প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে । বিনামূল্যে বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করছে। প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা সহ বর্তমান সরকার শিশুদের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। শিশুদের জন্য শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে ইতিমধ্যে অনেক দরিদ্র পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের কর্মস্থলের পরিবর্তে বিদ্যালয়ে পাঠাতে শুরু করেছেন।  কিন্তু তবুও থামছে না শিশু শ্রম। শিশু শ্রম বন্ধে প্রয়োজন সচেতনতা ও সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। 
তাই সরকারের পাশাপাশি আমাদেরকেও পথশিশু ও অবহেলিত শিশুদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এ বিষয়ে আমাদেরকেও সচেতন হতে হবে। আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। তাদের ওপরে নির্ভর করছে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি। আমরা সকলকে শিশুশ্রমের ভবিষ্যৎ পরিনতি ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত করে শিশু শ্রম মুক্ত দেশ গড়তে সহযোগিতা করি।