কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিলম্বে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েও পরীক্ষা দিতে না পারায় দুই পরীক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ সময় তারা ভৈরব-কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক সড়কে বাসের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
তৎক্ষনাত এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিকুর রহমান সবুজের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে তিনি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে তাদের হাতে শিক্ষার্থীদের তুলে দেন।
শিক্ষার্থীরা হলো পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার হাজী ইউছুফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রুমান আহম্মেদ (১৫) এবং ভৈরব এমপি গার্লস হাইস্কুলের তিশা আক্তার (১৫)।
রোববার (৩০ এপ্রিল) সারাদেশে একযোগে সকাল ১০টায় এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। এই পরীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালানো হলেও ব্যতিক্রম ছিল ভৈরবের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই শিক্ষার্থীদের বেলায়। ভৈরব ইউছুফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুমান আহম্মেদ এবং ভৈরব এমপি গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষার্থী তিশা আক্তার বন্ধুদের দেয়া ভুল তথ্যের ওপর নির্ভর করে পরীক্ষা কেন্দ্রে বিলম্বে এসে ঢুকতে চায়।
ভৈরবের ওই দুই পরীক্ষার্থীর দাবি, দুপুর ২টায় বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে বন্ধুরা তাদের জানায়। পরে তারা সকাল ১০টায় জানতে পারে পরীক্ষার সময়সূচি সকাল ১০ টায়। তারপর তারা দ্রুত সকাল সাড়ে ১১ টায় স্থানীয় পরীক্ষা কেন্দ্র সরকারি কেবি হাইস্কুল কেন্দ্রে ছুটে যায়। কিন্তু কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ তাদের ঢুকতে দেয়নি। এই ঘটনায় তারা হতভম্ব হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ছুটে যায়। সেখানে ইউএনওকে না পেয়ে তারা উপজেলা কার্যালয়ের সামনের ভৈরব – কিশোরগঞ্জের আঞ্চলিক সড়কে বাসের নিচে ঝাঁপ দেয়ার চেষ্টা চালায়। এই সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ইউএনও’র মাধ্যমে অবিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করে।
ইউছুফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পি আর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তারা তো শিক্ষার্থীই না। তা না হলে একজন পরীক্ষার্থী তার পরীক্ষার সময়সূচি জানবে না, তা হতেই পারে না। এটা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের গাফলতি।
পরীক্ষা কেন্দ্র ভৈরব সরকারি পাইলট মডেল কেবি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘দুজন পরীক্ষার্থী নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে বেলা সাড়ে ১১ টায় কেন্দ্রে পৌঁছে, এ কারণে তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। নিয়মের বাইরে কেন্দ্রে উপস্থিত হলে পরীক্ষা দেয়ার কোন সুযোগ আমরা দিতে পারি না।’
পাবলিক পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও সাদিকুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ঢাকা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ ব্যাপারটি অবগত করি। কিন্তু বোর্ড থেকে অনুমতি না পাওয়ায় পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড়া দুই পার্টের পরীক্ষার এক পার্ট ততক্ষণে শেষ হয়ে যায়।’
আপনার মতামত লিখুন :