গেল দেড় মাসে নেত্রকোনায় পানিতে ডুবে ১৬ জননের মৃত্যু হয়েছে। একজন বৃদ্ধ বাদে এরমধ্যে বাকি ১৫ জনই শিশু। শুধু জুন মাসেই পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ১০ শিশুর। চলতি জুলাই মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত জেলায় আরও ৫শিশু সহ ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বিভিন্ন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর রোধে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়না বলেও দাবি সচেতন নাগরিকদের।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায়, গেল জুন মাসেই জেলার ৬ উপজেলায় ১০ জন শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। ২ ও ৩ জুন খালিয়াজুরী উপজেলায় ২ জন, ৬ ও ১০ জুন দুর্গাপুরে ২ জন, ১৬ জুন কলমাকান্দায় ১ জন, মোহনগঞ্জে ২জন, ১৯ জুন বারহাট্টায় ১ জন, ২৪ জুন কলমাকন্দায় ১ জন ও ২৫ জুন মোহনগঞ্জে ১ জন শিশুর মৃত্যু হয়। এরা প্রত্যেকেই ৫ বছরের কম বয়সী। এদিকে চলতি মাসের ১৪ জুলাই পর্যন্ত তিন উপজেলায় এক বৃদ্ধ নারী ও ৫ জন শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। ৪ জুলাই পূর্বধলা উপজেলায় দুই ইউনিয়নের ভাই-বোনসহ মোট ৩ শিশু, ১০ জুলাই কলমাকন্দায় ১ শিশু ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ৭০ বছর বয়সী নারী এবং ১৪ জুলাই খালিয়াজুরীর কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে হাওরের পানিতে পড়ে ১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুই ৪ জন।
শিশু মৃত্যুর পরিসংখ্যান না থকলেও সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে জেলার ৩ উপজেলায় সাঁতার শেখানো কার্যক্রম এবং ৫ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার কেন্দ্র খোলার কথা জানান জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মীর বাবলুর রহমান।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার অভিজিৎ লৌহ পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে বলেন, বছরে প্রায় ১৪ হাজার শিশু মারা যাচ্ছে। শুধুমাত্র জ্ঞান এবং সচেতনতাই এর জন্য দায়ী। তবে এটি প্ররিরোধযোগ্য মৃত্যু বলেও জানান তিনি। একটু সচেতন হলেই এই মৃত্যু রোধ করা যায়।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী, কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর এই ৫ উপজেলাকে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঝুঁকিপূর্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এর বাইরেও বারহাট্টাসহ প্রায় সকল উপজেলাতেই কমবেশি এই মৃত্যু ঘটছে।
আপনার মতামত লিখুন :