এক দশক আগে, ইউনিসেফ, ইউএন গ্লোবাল কমপ্যাক্ট এবং সেভ দ্য চিলড্রেন, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসমূহে স্বেচ্ছায় ব্যবহারের লক্ষ্যে শিশু অধিকার এবং ব্যবসার নীতি সংক্রান্ত এক সহায়িকা তৈরি করেছিল। এই সহায়িকার উদ্দেশ্য ছিল কর্মক্ষেত্র, বাজার এবং ব্যবসায়ী কমিউনিটির সকলে যেন শিশুদের অধিকারকে সম্মান জানিয়ে নিজ নিজ কর্পোরেট দায়িত্ব পালন করে। এই বৈশ্বিক সহায়িকার লক্ষ্য ছিল ব্যবসার কারণে সৃষ্ট শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে এবং ব্যবসা-পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দুতে শিশু অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে দায়িত্বশীল আচরণ পালন করা। গত এক দশকে এই বিষয়ে বেশ কিছু অগ্রগতি সাধিত হলেও এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
এই প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সিন্ডিকেট হলে আজ এক জাতীয় সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। এনএসইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে, পূর্বে-ধারণকৃত ভাষণে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ব্যবসার সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করতে শিশু অধিকার এবং ব্যবসায়িক নীতির কাঠামো মেনে চলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন উন্নত, সমৃদ্ধশীল ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, সরকার, বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসা-প্রতিঠানসমূহের পক্ষেই এই বিষয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের সক্ষমতা রয়েছে। শিশুদের প্রতি প্রতিশ্রুতি পালনে পিতামাতা, চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠানসহ সকলকেই এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন ভবিষ্যতে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বজায় থাকে এবং ব্যবসার সম্মৃদ্ধিতে পরবর্তী প্রজন্মের প্রয়োজনীয় দক্ষতাও অর্জিত হয়।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন,বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে নারীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের অধিকার পায় না।
তিনি আরও বলেন, শিশুরা আমাদের সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ এবং তাদের রক্ষা করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান এইচ.ই. মিস্টার চার্লস হোয়াইটলি বলেন, শিশুরা ক্রমাগত দারিদ্র্য, শোষণ এবং বৈষম্যের সম্মুখীন হয়, ব্যবসা এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি আরও যোগ করেছেন, আমরা খুব আশাবাদী যে এই সম্মেলন এমন একটি নিরবচ্ছিন্ন এবং অনায়াসে পরিবর্তনের রূপান্তর হবে এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক মহিলা, সরকারী এবং অন্যান্য স্তরে কাজ করছেন।
বাংলাদেশে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রধান এইচ.ই. মিস্টার চার্লস হোয়াইটলি, বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, বাংলাদেশে সুইডিশ রাষ্ট্রদূত মিস আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে; শ্রম ও কর্মসংস্থান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক, এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ বেসরকারি খাত- ইউনিলিভার, গ্রামীণফোন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, ডিবিএল গ্রুপ এবং বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও এই সিম্পোজিয়ামে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে এনএসইউ এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের মধ্যে সম্প্রতি সম্পাদিত একটি সমঝোতা স্মারকের আওতায় পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :